রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজে (শেবাচিম) হাসপাতালে দুইদিনে ২৪ দিন বয়সী এক শিশুসহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে ষাটোর্ধ ৪ বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সকাল থেকে রোববার সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, রোববার (১২ জুলাই) সকাল ১০ টা ১০ মিনিটে বরিশাল নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গোলাম হোসেনের ২৪ দিন বয়সী শিশু সন্তান শিরিন শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে সে ৬ জুলাই রাতে সাড়ে ১২ টায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ভর্তির সময় তার বয়স ছিলো ১৭ দিন, আর ভর্তির আগে ১ জুলাই ওই শিশুর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডাঃ এস এম মনিরুজ্জামান।
এছাড়া শনিবার (১১ জুলাই) বিকেল ৪ টায় বরিশাল নগরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিক আলী (৮০) শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে সে ৪ জুলাই বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ভর্তির পর ৯ জুলাই তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসে।
একইদিন পটুয়াখালী জেলার খেপুপাড়া এলাকার বাসিন্দা সূর্য্য বানু (৮৬) শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সে ৭ জুলাই বিকেল রাত ১০ টা ৪০ মিনিটে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ভর্তির আগে ৫ জুলাই তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসে।
অপরদিকে শনিবার (১১ জুলাই ) দিবাগত রাত ১১ টা ৫৫ মিনিটে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা লুৎফর রহমান (৬৫) শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে সে ২৮ জুন বিকেল ৫ টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ভর্তির পর ২৯ জুন তার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসে।
এছাড়া উপর্সর্গ নিয়ে আরো ৪ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, রোববার (১২ জুলাই) সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাসিন্দা কদম আলী (৬৫) শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে তিনি ভোররাত ৪ টার দিকে উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
এরআগে সকাল ৭ টায় ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার সুফিয়া বেগম (৬০) শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে তিনি শনিবার দিবাগত রাতে পৌনে ১ টার দিকে উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
এরআগে শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১ টায় শেবাচিম হাসপাতালের এক চিকিৎসকের স্বজন আঃ গনি হাওলাদার (৭০) শেবাচিম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে তিনি ৭ জুলাই সকাল ৯ টা ১০ মিনিটে উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তবে তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ হলে রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ আসে।
এছাড়া শনিবার বিকেলে বরিশালে উজিরপুর উপজেলার পূর্ব সাতলা গ্রামেন সন্তস কুমার রায় (৬৮) শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরআগে তিনি ১১ জুলাই বিকেল ৩ টা ৫ মিনিটে উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে।
মৃতদের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে করোনা, আইসোলেশন ও আইসিইউ ইউনিটে ১৩১ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। যারমধ্যে ৫১ জন রোগী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।